15/05/2025
বাংলা সিনেমার গল্প: ১২৮
(বেখবর হলিউড)
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ:
বিড়ি খাবি খা, মইরা যাবি যা!
হলিউডের সিনেমাগুলো মুক্তির দিনেই প্রদর্শন করা যাচ্ছে না! কেনো? -- লম্বা পোস্ট, বিড়ি জ্বালিয়ে (বিড়ি জ্বালাইলে জিগারছে প্রিয়া, জীগারমা বড়ি আগ হে) পড়তে বসুন! এই পোস্টটি লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশে হলিউড প্রদর্শন ক্ষমতা সম্পন্ন সিনেমা হলের সংখ্যা ১০টি! যদি কপালগুনে চট্রগ্রামের সিলভারস্ক্রীণ এবং স্টার সিনেপ্লেক্সের রাজশাহী শাখা পূণরায় কার্যক্রম শুরু করে, তবে এই সংখ্যা হবে ১২টি, মানে মাত্র ১ ডজন!
☝️জেনে রাখুন এক:
একই মানের দুটো স্ক্রীণের মধ্যে যদি একটিকে হলিউড প্রদর্শন (DCI DCP) উপযোগী করতে হয়, তবে অন্যটি থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ লাগে! লেন্স ও সার্ভার ছাড়া একটা Barco 4K লেজার প্রজেক্টরের দাম শুরু হয় ৬০ লক্ষ টাকা থেকে; তাই যেসব স্ক্রীণে DCP ফাইল থেকে বাংলা, হিন্দি, হলিউডি সিনেমা প্রদর্শিত হয়, সেইসব স্ক্রীণের শো পরিচালনার খরচ অন্য স্ক্রীণটি থেকে অনেক অনেক বেশী!
✌️জেনে রাখুন দুই:
বাংলাদেশ ফ্লিম সেন্সর/সার্টিফিকেশন বোর্ডের DCP ফাইল দেখা বা সেন্সর করার মতো কোনো প্রযুক্তি নেই; (এরা এখনও হাতে লবন রেখে কাঁচা আম খায়) একারণে তারা মুক্তির অনেক আগেই হলিউডি চলচ্চিত্রের সেন্সর বা সার্টিফিকেট দেবার যোগ্যতা রাখে না! ---- সমস্যা শুরু এখান থেকেই...
বর্তমানের অস্থায়ী সরকার আসার আগে, ৯৯.৯৯% হলিউডি সিনেমার সেন্সর শো হতো মুক্তির আগের রাত বা মুক্তির দিনের প্রথম শোয়ের আগে আগেই; এবং তা করা হতো কোনো একটি সিনেপ্লেক্সের কোনো একটি শাখায়! যিনি যা যারা এই সার্টিফিকেশন শো দেখতেন, তারা যতটা না দেখতেন, তার চেয়ে বেশী আপ্যায়িত হয়ে নাম-কা-ওয়াস্তে সার্টিফিকেট দিয়ে দিতেন! বলুন-তো: কয়টা হলিউডি সিনেমার বাংলাদেশী সার্টিফিকেট নিজ চোখে অনলাইনে দেখেছেন?
বাংলাদেশে হলিউড চলচ্চিত্র আমদানী এবং ৯৯% সিনেপ্লেক্সগুলোর মালিকানা বিগত সরকার অথবা ১৯৭১ সমর্থিত শক্তির নিকটবর্তীদের; যারা বর্তমানে কোনঠাসা অবস্থানে জীবিত আছেন; সেইসাথে তারা হলিউডি চলচ্চিত্র মুক্তির আগেই মন্ত্রণালয়ের সকল কাগজ এবং আমদানীজনিত জটিলতার সমাধান আগের মতো সহজে করতে সমর্থ হচ্ছেন না; বা হতে দেওয়া হচ্ছে না! মন্ত্রণালয় এখন তাদের জন্য যন্ত্রণালয় হয়ে দাঁড়িয়েছে!!
বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ছোট মার্কেটে সরাসরি কোনো হলিউডি প্রযোজনা সংস্থা চলচ্চিত্র দিতে আগ্রহী হন না, একারণে মুক্তির দিনেই হলিউডের চলচ্চিত্র প্রদর্শনে পার্শ্ববর্তী দেশেরও সহযোগীতা কম-বেশী নিতে হয়; আর বুঝতেই তো পারছেন, সহজ সম্পর্ক যদি তিক্ততায় গড়ায়, তখন এক-বিছানায় পশ্চাৎদেশে পশ্চাৎদেশ রেখে ঘুমানোর দূরত্ব তাঁরাদের থেকেও বেশী হয়!
ফলাফলে:
হলিউডের চলচ্চিত্রের সহজ আমদানী, সেন্সর এবং মুক্তির দিনেই প্রদর্শন সেইসব কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীদের মতো হয়ে যাচ্ছে, যারা নিয়মিত মলত্যাগ করতে টয়লেটে ঠিকই যান, কিন্তু বিড়ির পর বিড়ি ধরিয়েও দু-একটা ঠুশ-ঠাশ পাদ ত্যাগ ছাড়া কিছুই বের হয় না!
অতএব একথা নিশ্চিত:
যদি আগামী আরও ৮/৯ মাস হলিউডের চলচ্চিত্র মুক্তির বিষয়ে আলোচিত সমস্যার সমাধান না হয়, তবে দেশের মাল্টিপ্লেক্সগুলোরও অকাল মৃত্যু কোনো কিস্তি সুদেই ঠেকানো সম্ভব না!
বিঃদ্রঃ
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমাধান বিড়ি নয়; সঠিক খাবার গ্রহণ, নিয়মিত মাত্রায় ঔষধ এবং প্যারাফিনযুক্ত গ্লিসারিন! এটা না করে না করে বেশী চাপাচাপি করলে রক্তপাত বন্ধ করা অসম্ভব, এবং এই রক্তপাতকে রজঃস্রাব ভেবে গর্দভের মতো ভুল করবেন না!
সহজ বাক্য:
শুধুমাত্র বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে সিনেপ্লেক্স বাঁচবে না!