07/04/2025
একজন চলচ্চিত্র পরিচালকের কাজ হলো চিত্রনাট্যকে একটি পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্রে রুপান্তরিত করার একটি উপায় কল্পনা করা এবং তারপর এই দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়ন করা। এটি করার জন্য তার চলচ্চিত্র নির্মাণের শৈল্পিক এবং প্রযুক্তিগত উপাদানগুলি তত্ত্বাবধান করেন। এর মধ্যে চলচ্চিত্রের কলাকুশলীদের এমনভাবে সংগঠিত করা অন্তর্ভুক্ত যাতে তারা চলচ্চিত্রের তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করতে পারে এবং অভিনেতাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এর জন্য প্রয়োজন দলগত নেতৃত্বের দক্ষতা, সেইসাথে চলচ্চিত্র সেটের চাপপূর্ণ, দ্রুতগতির পরিবেশেও একক মনোযোগ বজায় রাখার ক্ষমতা। এ সকল স্কিল একজন নব্য স্বপ্নবাজ ডিরেক্টর M Raahim ভাইয়ের আছে তা জংলির শ্যুটিং করেই বুঝতে পেরেছি।
যেহেতু চলচ্চিত্র পরিচালক বিভিন্ন সৃজনশীল ব্যক্তির সফল সহযোগিতার উপর নির্ভরশীল, যাদের শৈল্পিক আদর্শ এবং দৃষ্টিভঙ্গির তীব্র বিরোধিতা রয়েছে, তাই প্রয়োজনে তাদের মধ্যস্থতা করার জন্য দ্বন্দ্ব-নিষ্পত্তির দক্ষতাও থাকতে হবে। এবং সেই দক্ষতা নিজ হাতে কাজে লাগিয়েছে।তাছাড়া,অভিনেতা এবং কলাকুশলীদের তিনি হেল্পফুল হয়ে কাজ করেছে জংলিতে।
জংলি স্ক্রিপ্ট ন্যারেশনটা বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই জংলি দেখতে হবে। সিনেমার এই ন্যারেশনটা আমাদের দেশের অডিয়েন্সকে খুব কানেক্ট করেছে। যে ইমোশনে জাম্পিং করেছে জংলির নৌরিতা (পাখি) এবং সিয়ামের কেমিস্ট্রি সেটা Raahim ভাইয়ের স্টোরি টেলিং এক কথায় অসাধারণ।
একজন ডিরেক্টর সেটে এতো কুল কিভাবে থাকে! এই প্রশ্ন আমার মনে আসছে জংলির ডিরেক্টরকে দেখে।
বকাবাজি, মাথা গরম না করে ডিরেকশন দিচ্ছে আমি বাংলাদেশে এর আগে এতো কুল ডিরেক্টর (ফিকশনে) দেখি নাই সেটে। আপনারা ছবি গুলো দেখলে বুঝতে পারবেন। মাঝেমধ্যে তিনি নিজেই ডিরেক্টর চেয়ারটা রেখে কখনও AD অনন্যা ডিপার্টমেন্টর কাজ ও করছে। Raahim ভাই নিজেকে এতো যত্ন করে নাই জংলিকে যতটা আগলে রেখে কেয়ার করেছে। জংলির সিনেমা নিজের মতো ওন করে নিয়েছে। শুধু উনার কথায় বলছি আজ উনার সাথে পুরো ইয়াং একটা টিম জংলিকে ওন করে শ্যুটিং করেছিলো।
M Raahim ভাইয়ের পোস্ট অনুযায়ী -
শ্যুটিংয়ের সময় কাউকে বুঝতে দেইনি যে আমি বুকের ভেতর কী নিয়ে শ্যুট করেছি। একটা সময় আর নিজেকে ধরে রাখতে পারতাম না, কখনো কখনো আড়ালে গিয়ে একা কান্না করতাম। এডিটের সময় কান্না করেছি, ডাবিংয়ের সময় করেছি, বিজিএম যখন করেছি, তখন করেছি। ফাইনাল সাউন্ড মিক্সের সময় যখন আউটপুট নিবো; তখন এডিটর, মিউজিক ডিরেক্টর, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারসহ ওখানে উপস্থিত এমন কেউ নেই যে কান্না করেনি।
আর এখন দর্শকের রিঅ্যাকশন দেখে চোখ দিয়ে কখন পানি পড়ছে- বুঝতেই পারিনা। তবে এই কান্না হচ্ছে আত্মতৃপ্তির কান্না। এই কান্না হচ্ছে মায়ার কান্না, প্রাপ্তির কান্না, দর্শকদের ভালোবাসার কান্না 🙏
Raahim ভাইয়ের এই কথা গুলো আপনার প্রত্যেকটা ছবি দেখলে বুঝতে পারবেন। কতটা রাস শ্যুটিং নিয়ে এই জংলি সিনেমা উনি বানাইছে। আমার মনে হয় আমাদের একজন ইন্ড্রাস্ট্রিতে Raahim ভাই আছে। উনারে সময় দিলে বাজেট দিলে নেটফ্লিক্স, প্রাইম আপনাদের রুচির তুঙ্গে যাবে। একজন Raahim ভাই, জংলির পুরো ইয়াং টিমটাকে, বাংলা সিনেমাকে আশিবার্দ করুন দমায়ে রাখতে পারবেনা কেউ।
জংলির শ্যুট এবং রাহিম ভাইকে নিয়া দু -চার লাইনে শেষ করা সম্ভব না। এই গল্প আপনাদের আরেকদিন শুনাবে হয়তো জংলি টিম বা আমার কাজ করা জংলির বিহ্যান্ড দ্যা সিনে।
জংলি দেখুন, বাংলা সিনেমা দেখুন, রিভিউ দিন।
ছবি- Rohit Shayon