15/07/2025
এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে গেছেন। হেঁটে হেঁটে তারা পৌঁছালেন বানরের খাঁচার সামনে। দেখলেন, একজোড়া বানর দৌড়ঝাঁপ করছে, একে অপরকে ধরে খুনসুটি করছে। স্ত্রী হাসতে হাসতে বললেন,
“দেখো! কী চমৎকার, কী মিষ্টি তাদের ভালোবাসা। একসাথে খেলছে, হাসছে, সময় কাটাচ্ছে।”
এরপর তারা একটু এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ালেন সিংহের খাঁচার সামনে। দেখলেন, এক কোণায় সিংহ একা চুপচাপ বসে আছে। কিছুটা দূরে সিংহী, একাকী খেলছে, কিন্তু সিংহের কোন উৎসাহ নেই, কোন আগ্রহ নেই। স্ত্রী আফসোস করে বললেন,
“হায়, কত নিরস, কত একঘেয়ে এদের ভালোবাসা। একসাথে থেকেও কত দূরে!”
লোকটি কিছু বললেন না।
কিন্তু হঠাৎই স্ত্রীকে কিছু বোঝানোর জন্য একটা ছোট্ট লাঠি ছুড়ে মারলেন সিংহীর দিকে।
দেখা গেল, চুপচাপ বসে থাকা সিংহটি মুহূর্তেই গর্জন করে উঠে দাঁড়ালো।
চোখ লাল, গলায় গর্জন, হুংকার ছড়িয়ে তেড়ে এল সিংহীকে রক্ষা করতে।
তারপর লোকটি বললেন,
“এবার চলো, আবার একবার বানরের খাঁচার সামনে যাই।”
ফিরে গিয়ে স্ত্রী বানরটিকে লক্ষ্য করলেন।
লোকটি এবার স্ত্রী বানরটিকে উদ্দেশ্য করে ছোট্ট একটা লাঠি ছুঁড়ে মারলেন।
কিন্তু স্ত্রী বানর কষ্ট পেয়ে একপাশে সরে গেল, আর পুরুষ বানর?
সে তো খেলার মধ্যেই মগ্ন। একটিবারও ফিরে তাকালো না, কিছু অনুভবও করলো না।
লোকটি এবার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন,
“ভালোবাসা বোঝা যায় কেবল বাহ্যিক হাঁসি-খুশি, আনন্দ কিংবা খুনসুটি দেখে?
আসল ভালোবাসা তো তখন প্রকাশ পায়,
যখন প্রিয়জন বিপদে পড়ে।
তখন কারা রক্ষা করতে ছুটে আসে, কারা নিরব থেকে হৃদয়ের গর্জন দিয়ে ছুটে আসে—সেটাই ভালোবাসার সত্যিকার চিত্র।”
আসল ভালোবাসা হচ্ছে সেই গায়রত, সেই হিফাযত, সেই আগলে রাখার মানসিকতা—যা বিপদের সময় সামনে এসে পড়ে। গায়রতহীন পুরুষ, সে পুরুষই নয়। আর বানরের মতো হাসি-ঠাট্টার প্রেম? সেটা দুর্বল, ভঙ্গুর।
সুতরাং বুঝে নিবেন—আপনার পাশে থাকা মানুষটা সিংহ, নাকি বানর।
তবে নিজেরও চেষ্টা থাকা উচিত—বানরের মত আচরণ না করে সিংহের গায়রত রাখার।
ভালোবাসা শুধু শব্দের খেলায় নয়, প্রমাণ হয় প্রয়োজনের মুহূর্তে।
© Aiyaan